নিজস্ব প্রতিবেদক :মাদক, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, ইভটিজিং— হেন কোনো অপরাধ নেই, যার দেখা মিলবে না রাজশাহী রেলওয়ে কলোনির বস্তিতে। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স ঘোষনা দেওয়ার পর সারাদেশে প্রশাসনের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তারা নড়ে চড়ে বসেন। শুরু হয় দেশ ব্যপি মাদক বিরোধী অভিযান। পুলিশ, ডিবি ও র্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে অনেক মাদক ব্যবসায়ী। বর্তমানেও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে।
সম্প্রতী রাজশাহী নগরীতে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান ঝিমিয়ে পড়ায় আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এমনি একটি চিত্র দেখা গেল রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা থানাধিন হাজরাপুকুর ও রেলওয়ে কলোনীরতে অস্থায়ীভবে গড়ে উঠা বস্তি এলাকায়।
আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে হাজরাপুকুর পাবনা পাড়া ও রেলওয়ে কলোনীর বস্তিতে ২০/২২ জন মাদক সেবির ভীড় দেখা যায়। লাইন ধরে কিনছে হেরোইন-ইয়াবা।
তাও আবার প্রকাশ্য দিবালোকে। কাছে গিয়ে দেখা গেল বস্তি এলাকায় চারি দিক থেকে আসছে মাদক সেবিরা ওই এলাকার নারী মাদক সম্রাজ্ঞী শ্যমলীর কাছে, এক হাতে টাকা নিচ্ছে অপর হাতে হেরোইন-ইয়াবার পুরিয়া বের করে খদ্দেরদের বুঝিয়ে দিচ্ছে। এটা কিভাবে সম্ভব ?। শ্যমলী রেলওয়ে বস্তি এলাকার পুলিশের সোর্স, রাজ্জাক মাডার মামলার আসামি ও কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী খায়রুলের স্ত্রী।
মাদক সেবনকারীর একজনকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে জানায় বস্তির মাদক সম্রাট আক্কাশ ও তেতুর সহযোগী জেলে থাকার কারনে একচেটিয়া ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে শ্যমলী ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সারাদিন রাজশাহীর বিভিন্নপ্রান্ত থেকে অটো, রিক্সা, সাইকেল ও মোটর সাইকেল নিয়ে শতাধিক মাদক সেবনকারী আসে বস্তির শ্যমলীর কাছে। তার কাছ থেকে হেরোইন আর ইয়াবা কিনে নিয়ে যায় তারা।
সেই সাথে দুপুরের দিকে বস্তির পাসে পুকুরে স্থানীয় মা বোন ছাড়াও স্কুল কলেজের পড়ুয়া মেয়েরা গোসল করতে আসলে তাদের ইভটিজিং এর শিকার হতে হয় ওই মাদক সেবনকারীদের কাছে।
বস্তির দখলদারিত্ব স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীদের হাতে সেখান থেকে প্রতি মাসে ভাড়া আদায় করে তারা। পাশাপাশি রেলওয়ের বৈদ্যুতিক কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে অবৈধ সংযোগ নিয়ে ,অনায়াশে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে বস্তিবাসি ।
এবং সেই বিদ্যুৎ বিল গুনতে হচ্ছে সরকারকে। মাঝে মধ্যে ছিনতাই এর অভিযোগ পাওয়া যায় ওই এলাকায়। হেন কোনো অপরাধ নেই, যার দেখা মিলবে না রাজশাহী রেলওয়ে কলোনির বস্তি এলাকায়।
স্থানীয়রা আরও বলেন, শ্যমলীকে নিষেধ করলে এলাকার কিছু পুষা বাহিনি শ্যমলীর পক্ষ নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে আমাদের উপর। গালিগালাজ ওমারধরসহ উচ্ছেদের হুমকি প্রদান করে তারা। শ্যমলী দৈনিক ১ থেকে ২ লক্ষ টাকার মাদকের ব্যবসা করে বলে জানা গেছে। অপর দিকে তেতুর সহযোগী ইসরাফিল আটক হওয়ায় স্থান পরিবর্তন করে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে একাধিক স্থানীয়রা বলেন, পুলিশ আসে আর শ্যমলীর সাথে দেখা করে চলে যায়। ওই এলাকায় তেতু, খাইরুলের স্ত্রী শ্যামলী, ইসমাইলের ছেলে ইসরাফিল, আক্কাসসহ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী প্রকাশ্যে মাদকের ব্যবসা চালালেও তাদের ধরে না পুলিশ। এদের মধ্যে বিখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী তেতু ও শ্যমলী প্রকাশ্যে বলে থানা ফাঁড়িতে টাকা দিয়ে ব্যবসা করি। কাউকে গুনার টাইম নাই।
স্থানীয়রা আরো বলেন, এদের কারনে রাস্তা দিয়ে মা বোনদের চলাফেরা করতে ব্যপক সমস্যা হয়। তারপরও তাদের মাদক ব্যবসা বন্ধের বিষয়ে বল্লে তারা মাদক দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয় স্থানীয়দের।
জানতে চাইলে চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইন্চার্জ ওসি হুমায়ন কবির বলেন, বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী কে আটক করা হয়েছে, এছাড়া অন্যান্যদের আটকের চেস্টা চলছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.